১৫ বছরে উন্নয়নে খরচ দেড় লাখ কোটি টাকা, তবুও ধুঁকছে দেশের ৬৩% রেললাইন

Passenger Voice    |    ১১:২৪ এএম, ২০২৪-০৩-২১


১৫ বছরে উন্নয়নে খরচ দেড় লাখ কোটি টাকা, তবুও ধুঁকছে দেশের ৬৩% রেললাইন

গত ১৫ বছরে রেলের উন্নয়নে খরচ হয়েছে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা। অথচ এখনও নিরাপদ হয়নি রেলপথ। তথ্য বলছে, এ মুহূর্তে সারা দেশে প্রায় ৬৩ শতাংশ রেললাইনই ঝুঁকিপূর্ণ। এতে বাড়ছে দুর্ঘটনা, কমছে ট্রেনের গতি -- এমন মন্তব্য করে রেললাইনের আমূল সংস্কারের তাগিদ বিশেষজ্ঞদের। বিষয়টি স্বীকার করে দ্রুত উদ্যোগ নেয়ার আশ্বাস রেলমন্ত্রীর।

রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ বাজার এলাকা। এখানকার রেলপথে ট্রেন চলে কচ্ছপের গতিতে। কারণ, লাইন নড়বড়ে। অবস্থা এমন যে, হেঁটে যে কোন মানুষই ট্রেনের আগে চলে যেতে পারবে।

রাজবাড়ীর পাটুরিয়া জংশন থেকে গোয়ালন্দঘাট পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার রেলপথ পুরোটারই এ অবস্থা। জং ধরে মাইলের পর মাইলজুড়ে ক্ষয়ে গেছে রেললাইন। মাটি সরে যাওয়ায় বেশিরভাগ স্পটেই শূন্যে ঝুলে আছে লোহার পাত। ৫০-৬০ বছর আগের কাঠের স্লিপারে এখনও চলছে ট্রেন। মাইলজুড়ে  নেই সেই স্লিপার; যতটুকুই বা আছে সেটাও ভাঙা আর জরাজীর্ণ।

একেবারেই পাথর নেই ১২ কিলোমিটার রেলপথে। স্থানীয়রা বলছেন, বছর পাঁচেক আগে ইটের খোয়া দেয়া হলেও তাও হারিয়ে গেছে। নাট-বল্টু নাই, ফিশপ্লেট কিংবা সেফটি বন্ধনিগুলোও নড়বড়ে। হাত দিলেই খুলে আসছে ফিশপ্লেট আর কাঠের স্লিপার।

পাটুরিয়া থেকে গোয়ালন্দঘাট পর্যন্ত রেলপথের এক ইঞ্চিতেও নেই পাথর। আর স্লিপার যা রয়েছে সব কাঠের, পচে গেছে বহুকাল আগেই। তথ্য বলছে, শুধু এ লাইনটি নয়, সারা দেশে রেলপথের ৬৩ শতাংশই ঝুঁকিপূর্ণ।

এমন অবস্থায় যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অধ্যাপক ড. হাদিউজ্জামান ঝুঁকিপূর্ণ রেললাইন সংস্কারের পরামর্শ দিয়ে বলেন, যেগুলোতে সুযোগ আছে, তা সংস্কার করতে হবে। আর বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হলে গেলে তা তুলে নতুন লাইন বসাতে হবে। না হলে শুধু অর্থের অপচয় হবে; কিন্তু মানুষ সেবা পাবে না। 

আর বরাবরের মতো এবারও সংস্কারের গৎবাঁধা আশ্বাস দিতে ভুলেননি রেলমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম। তিনি বলেন, ‘রেললাইনের অবস্থা ভালো না। আমরা ক্রমান্বণে ঝুঁকিপূর্ণ লাইন অপসারণ করে নতুন লাইন বসাবো ইনশাআল্লাহ।’ অথচ গত ১৪ বছরে রেলের উন্নয়নে খরচ হয়েছে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা। এখন প্রশ্ন, তাহলে টাকাগুলো গেল কোথায়?